ডলারের বিপরীতে তুরস্কের মুদ্রা লিরার দরপতনে এবার রেকর্ড হয়েছে।
এই দরপতন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মাথাব্যথার একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এতে দেশটির নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম প্রতিনিয়ত বাড়লেও, লিরার দরপতনের সবচেয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে সেখানকার পর্যটন শিল্পে।
সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কের হোটেলগুলোতে পর্যটকের সংখ্যাও বেড়েছে।
শুক্রবার এক ডলার দিয়ে ছয় লিরা কেনা গেছে। অথচ জানুয়ারি মাসেও এক ডলার দিয়ে চার লিরা কেনা যেতো।
জানুয়ারি মাসের পর থেকেই তুরস্কের মুদ্রার ক্রমাগত দরপতন হতে থাকে। তখন থেকে এ পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে লিরা ৩৪ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে।
তুরস্কের মুদ্রার দরপতনের বেশ কিছু কারণ আছে। এ কারণে দেশটির অর্থনীতি নিচের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে ও আশংকা তৈরি হয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মনে করেন এ ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধে’ তারা জয়ী হবেন।
তিনি সুদের হার কম রেখে অর্থনীতি সম্প্রসারণের পক্ষে। অন্যদিকে অনেকে মনে করেন সুদের হার বাড়ানো উচিত।
কিন্তু মি: এরদোয়ান সুদের হার বাড়ানোর ঘোরতর বিরোধী। ফলে আশংকা রয়েছে যে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের বর্তমানে যে টানাপড়েন চলছে সেটির সমাধান হলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ভ্রমণ আয়োজনকারী সংস্থা টমাস কুক বলছে তুরস্কে ঘুরতে যাবার এটিই আসল সময়।
কোম্পানিটি বলছে চলতি বছর ব্রিটেন থেকে তুরস্কের ভ্রমণের হার ৬৪ শতাংশ বেড়েছে।
এক ডলার খরচ করে আগে যতটা তুরস্কের মুদ্রা পাওয়া যেতো এখন তার চেয়ে অনেক বেশি পাওয়া যাবে। ফলে পর্যটকদের খরচ কমে আসবে।
২০১৬ সালে তুরস্কে বেশ কিছু সন্ত্রাসী হামলার পর দেশটির পর্যটন শিল্পে যে মন্দা দেখা দিয়েছিল সেটি এবার কেটে গেছে।
ব্রিটেনের আরেকটি ভ্রমণ আয়োজনকারী কোম্পানি টিইউআই বলেছে বর্তমানে তুরস্ক, পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
গ্রীষ্মকালে ব্রিটেনের মানুষ যেসব জায়গায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করে, তার মধ্যে তুরস্কের অবস্থান উপরের দিকে আছে।
কিন্তু ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তুরস্কে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কয়েকটি জায়গায় না যাওয়ায় পরামর্শ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ তালিকায় তুরস্ক তিন নম্বর ক্যাটাগরিতে রয়েছে। সে অঞ্চলে ভ্রমণের ক্ষেত্রে মার্কিন নাগরিকদের পুনরায় বিবেচনা করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
সূত্র, বিবিসি